ঐতিহ্য

আজকের উজবেকিস্তানের বাবরই মুঘল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা।

ইতিহাসঃ-

সম্রাট বাবরঃ

জহির উদ্দীন মুহাম্মদ বাবর ভারতীয় উপমহাদেশে মুঘল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তিনি তার পিতা ও মাতার দিক থেকে তৈমুর এবং চেঙ্গিস খানের বংশধর ছিলেন। আজকের উজবেকিস্তানের ফরগনায় তার জন্ম হয়। যার ফলে তার চেহারায় মধ্য এশিয় মানুষের মুখের বৈশিষ্ঠ ছিল বলে মনে করা হয়। তিনি 1526 খ্রিস্টাব্দে পানিপথের প্রথম যুদ্ধে দিল্লির সুলতান ইব্রাহিম লোদিকে পরাজিত করেন এবং মুঘল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন।1720 সাল অবধি মুঘল সাম্রাজ্যের শক্তি ও শাসন কাঠামো স্থায়ী ছিল। তবে এর পর ক্রমাগত দুর্বল শাসকদের শাসনে মুঘল সাম্রাজ্য শুধুমাত্র দিল্লি শহরে সীমাবদ্ধ হয়ে পরে। 1857 সালের বিদ্রোহের পরে সাম্রাজ্যটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়।

সম্রাট হুমায়ুনঃ

হুমায়ুন ছিলেন মুঘল সাম্রাজ্যের দ্বিতীয় সম্রাট, যিনি 1530 থেকে 1540 সাল পর্যন্ত এবং আবার 1555 সাল থেকে 1556 সাল পর্যন্ত পূর্ব আফগানিস্তান, পাকিস্তান, উত্তর ভারত এবং বাংলাদেশের বিস্তির্ন অঞ্চলে শাসন করেছিলেন। তার চেহারায় ইরান ও ইরাকের ছাপ ছিল। কারণ তার মা, মাহাম বেগম খোরাসানের সুলতান হোসেন মির্জার আত্মীয় ছিলেন। হুমায়ুন শের শাহ সূরির কাছে পরাজিত হন। পরে তিনি সাফাভিদের সাহায্যে সাম্রাজ্য পুনরুদ্ধার করেন।

সম্রাট আকবরঃ

জালাল উদ্দীন মুহাম্মদ আকবর ছিলেন তৃতীয় মুঘল সম্রাট। তিনি 1556 সাল থেকে 1605 সাল পর্যন্ত রাজত্ব করেন। আকবর মুঘল সামরিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক এবং অর্থনৈতিক আধিপত্যের মাধ্যমে ভারতীয় উপমহাদেশের বেশিরভাগ অংশকে দখল করার চেষ্টা করেন। আকবরের অধীনে, মুঘল ভারতে একটি শক্তিশালী এবং স্থিতিশীল অর্থনীতি গড়ে উঠেছিল। আকবর দীন-ই ইলাহী নামে একটি ধর্ম প্রচার করেন। আকবরের পর তার ছেলে যুবরাজ সেলিম সম্রাট হন।

সম্রাট জাহাঙ্গীরঃ

মির্জা নুর উদ্দীন মুহাম্মদ সেলিম বা জাহাঙ্গীর চতুর্থ মুঘল সম্রাট ছিলেন, যিনি 1605 থেকে 1627 সালে তাঁর মৃত্যু পর্যন্ত শাসন করেছিলেন। তিনি ছিলেন আকবর ও সম্রাজ্ঞী মরিয়ম উজ জামানির তৃতীয় এবং একমাত্র জীবিত পুত্র। ভারতীয় সুফি সাধক সেলিম চিশতীর নামে তার নামকরণ করা হয়েছিল। সারা জীবন আফিম এবং মদ সেবনের জন্য প্রায়শই অসুস্থ থাকা জাহাঙ্গীর 1627 সালে মারা যান।

সম্রাট শাহজাহানঃ

মুঘল সাম্রাজ্যের পঞ্চম সম্রাট ছিলেন শাহজাহান। তিনি 1628 সালের জানুয়ারী মাস থেকে 1658 সালের জুলাই মাস পর্যন্ত রাজত্ব করেন। তার শাসনকালে মুঘলরা তাদের স্থাপত্য কৃতিত্ব এবং সাংস্কৃতিক গৌরবের শীর্ষে পৌঁছেছিল। তিনি লাল কেল্লা, শাহজাহান মসজিদ এবং তাজমহল সহ অনেক স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করেন।

শাহজাহান দাক্ষিণাত্য সুলতানদের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক অভিযান, পর্তুগিজদের সঙ্গে বিরোধ এবং সাফাভিদের সঙ্গে যুদ্ধের মাধ্যমে সাম্রাজ্য বৃদ্ধির চেষ্টা করেন। 1657 সালের সেপ্টেম্বরে শাহজাহান তার জ্যেষ্ঠ পুত্র দারা শিকোহকে তার উত্তরসূরি নিযুক্ত করেন। এই সময় গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। এই যুদ্ধে বিজয়ী হয়ে ঔরঙ্গজেব সম্রাট হন।

Back to top button