নবীনগর

‘কাবিখার টাকা লোপাট ‘শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ!

গত ২৭ মে, বৃহস্পতিবার ‘কাবিখার টাকা লোপাট’ শিরোনামে দৈনিক সমকাল পত্রিকার ৬ এর পাতায় প্রকাশিত সংবাদটির প্রতি আমার দৃষ্টি আকর্ষিত হয়েছে এবং আমি এ সংবাদের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি মর্মে সাংবাদিকদের সাথে দুঃখ প্রকাশ করেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া নবীনগর উপজেলার নাটঘর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল কাশেমের ছেলে মোঃ এরশাদ।

ঘটনার সত্যতা জানতে সরজমিনে যাওয়া সাংবাদিকদের প্রকাশিত সংবাদে প্রতিবাদ প্রসঙ্গে মোঃ এরশাদ মিয়া বলেন,প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়েছে যে, “নবীনগর উপজেলার সঙ্গে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ মহেশ রোড সংস্কার কাজে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী সরবরাহসহ টিআর-কাবিখার ১৮ লাখ টাকা লোপাটের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় নেতা নাটঘর গ্রামের এরশাদ মিয়া ও এমপির ব্যক্তিগত সহকারী মোক্তার হোসেনের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ ওঠে। উপজেলার বাস্তবায়নাধীন উন্নয়নমূলক কাজের অগ্রগতি পর্যালোচনা সভায় এ নিয়ে আলোচনাও হয়েছে।

প্রকৃত সত্য হচ্ছে, সড়কটির সংস্কারকাজ পেয়েছিল হাসান এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ওই প্রতিষ্ঠান ঠিক সময়ে কাজ শুরু না করায় স্থানীয়রা চরম দুর্ভোগে পড়েন। এ অবস্থায় আমি‌ এলাকায় ঠিকাদারি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে স্থানীয় এমপি আমাকে সড়কটি সংস্কারের অনুরোধ করার পর আমি স্বপ্রণোদিত হয়ে সোয়া ১২ কিলোমিটার সড়কটি সংস্কার করতে ১১০ ট্রাক্টর ইট যার মূল্য সাত লাখ ৭০ হাজার টাকা, ৪০ দিন চলা একটি এক্সকেভেটর (সেভেনে মডেলের) এর ভাড়া ও জ্বালানি খরচ বাবদ প্রায় সাড়ে নয় লাখ টাকা এবং এর চালক ও চালকের সহযোগীর বেতন বাবদ ৮০ হাজার টাকা ব্যয় করেছি। এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী সড়কটি সংস্কারের সুবিধার্থে বিনামূল্যে একটি রোলার প্রদান করেছেন। আর কাজ পাওয়া হাসান এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী খায়রুল হাসান শ্রমিক ও বালুর খরচ বহন করেছেন। সড়কটি সংস্কারের বিপরীতে আমি এখনও পর্যন্ত কোনো বরাদ্দই পাইনি। আর কাবিখা কিংবা অন্য কোন বরাদ্দের টাকা তোলার প্রশ্নই আসে না। কিন্তু প্রতিবেদক এখানে আমাকে এবং স্থানীয় এমপির ব্যক্তিগত সহকারী মোক্তার হোসেনকে জড়িয়ে উদ্দেশ্যমূলক একটি সংবাদ প্রতিবেদন তৈরি করেছেন।

তিনি সংবাদের সূচনাতেই বলেছেন, উপজেলার বাস্তবায়নাধীন উন্নয়নমূলক কাজের অগ্রগতি পর্যালোচনা সভায় এই নিয়ে আলোচনা হয়েছে- যেটা সম্পূর্ণ মিথ্যা তথ্য। ওই সভায় এই নিয়ে বিন্দুমাত্র কোনো আলোচনা হয়নি। এর কোনো প্রমাণ উক্ত প্রতিবেদক দেখাতে পারবেন না।

মূলত মাহাবুব আলম লিটন নামের এই প্রতিবেদক নিজেও ঠিকাদারি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। প্রেসক্লাবের সভাপতি পদ থেকে সদ্য সাবেক হওয়া মাহাবুব আলম লিটন সাংবাদিকতার প্রভাব ও নানা চেষ্টা-তদ্বির করে মুজিববর্ষের উপহারস্বরূপ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগে গৃহহীনদের জন্য গৃহনির্মাণ প্রকল্পের অধীনে শ্যামগ্রাম ইউনিয়নের শাহবাজপুর গ্রামের হিন্দু পাড়ায় ৩৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০টি ঘর নির্মাণের কাজ ভাগিয়ে নিয়েছেন। গৃহহীনদের কাছে সরকারের এসব ঘর হস্তান্তরের আগেই বালু সিমেন্টের পলেস্তরা দেয়ালে হাত দিতেই খসে পড়ছে বলে স্থানীয়ভাবে অভিযোগ ওঠে। এরপর দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের পক্ষে উপজেলা প্রশাসন এই কাজের তদারকি করে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে অনিয়মের বিষয়টি তদন্ত করতে চার সদস্যের একটি কমিটিও গঠন করা হয়। এমনকি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনিয়মের বিষয়ে মাহবুব আলম লিটনের কাছে কৈফিয়ত চান এবং ভেঙে যাওয়া পিলার নতুন করে সংস্কার করতে বলেন।

মূলত মুজিববর্ষের উপহার প্রধানমন্ত্রীর এসব কাজে কোনো অনিয়ম উপজেলা প্রশাসন বরদাশত করেনি বলে সাংবাদিক মাহবুবুল আলম লিটন ঈর্ষান্বিত হয়ে এমন প্রতিবেদন তৈরি করেছেন।

সমকালে প্রকাশিত সংবাদটিতে প্রতিবেদক আমাকে এবং এমপির ব্যক্তিগত সহকারীকে বলির পাঠা বানিয়েছেন। তার ঠিকাদারি কাজের অনিয়মের ব্যাপারে উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সংসদ সদস্য এবাদুল করিম বুলবুল কঠোর হয়েছেন বলে তিনি এমপি’র ব্যক্তিগত সহকারীর পিছু লেগেছেন। নিজের ঠিকাদারি কাজের অনিয়মের বিষয়ে তদন্ত চলাকালীন সময়ে নিজের বদনাম ঢাকতে তিনি অন্যের বিরুদ্ধে মনগড়া প্রতিবেদন তৈরি করেন। সাংবাদিকতাকে ঢাল হিসাবে ব্যবহার করে তিনি নিজের অন্যায় থেকে পার পাওয়ার পাঁয়তারা করছেন। এরই ফলশ্রুতিতে তিনি অযথা বানোয়াট সংবাদ তৈরি করে আমাদের দুজনকে ভিক্টমাইজ করেছেন।আমি এর প্রতিকার চায়।

Back to top button