দুর্যোগ মোকাবেলায় ২২৫ স্থাপনা উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী


প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় ২২৫টি স্থাপনা উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী। এর মধ্যে রয়েছে ১১০ টি বহুমুখী ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র, ৩০ টি বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র,৩০ টি জেলা ত্রাণ ও গুদাম কাম দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা তথ্য কেন্দ্র ও ০৫ টি মুজিব কিল্লা উদ্বোধন এবং ৫০ টি মুজিব কিল্লা’র ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন।
শনিবার (২২ মে) দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা: মোঃ এনামুর রহমান এই তথ্য জানান। মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এ উপলক্ষে আয়োজিত সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এসব কথা বলেন ।
এনামুর রহমান বলেন, বঙ্গবন্ধুর নির্দেশনায় ঘূর্ণিঝড় ও বন্যা হতে মানুষের জানমাল রক্ষার্থে মাটির কিল্লা নির্মাণ করা হয়, যা সর্ব সাধারণের কাছে মুজিব কিল্লা নামে পরিচিত । তারই আধুনিক রূপে উপকূলীয় ও বন্যা উপদ্রুত ১৪৮ টি উপজেলায় ৫৫০ টি মুজিব কিল্লা নির্মাণ, সংস্কার ও উন্নয়ন কার্যক্রম চলমান । উপকূলীয় দুর্গত জনগণ যেমন সেখানে আশ্রয় নিতে পারবে তেমনি তাদের প্রাণিসম্পদকে ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে পারবে । এছাড়া জনসাধারণের খেলার মাঠ, সামাজিক অনুষ্ঠান ও হাট-বাজার হিসেবেও এটি ব্যবহার করা যাবে ।
উপকূলীয় এলাকায় বয়স্ক, গর্ভবতী, শিশু ও প্রতিবন্ধিতাবান্ধব ৩২০ টি বহুমুখী ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে । এসব আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় দুই লক্ষ ৫৬ হাজার বিপদাপন্ন মানুষ এবং প্রায় ৪৪ হাজার গবাদিপশুর আশ্রয় গ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে । সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের পূর্বাভাস ঘোষণার সাথে সাথে মানুষ তাদের গবাদিপশু সহ এসকল আশ্রয়কেন্দ্রে স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় আশ্রয় নিতে পারবেন ।
তিনি বলেন,বন্যাপ্রবণ ও নদীভাঙ্গন এলাকায় দুর্যোগ ঝুঁকিহ্রাসে বন্যা পীড়িত দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য দ্বিতল বিশিষ্ট ২৩০টি বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে । এতে প্রায় ৯২ হাজার মানুষ এবং ২৩ হাজার গবাদিপশুর আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে । ২০১৮-২০২২ মেয়াদে ৪২৩ টি বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে ।
দুর্যোগে তাৎক্ষণিক সাড়াদানের অংশ হিসেবে ত্রাণ সামগ্রী সরবরাহের নিমিত্ত পর্যাপ্ত ত্রাণ মজুদকরণ করা হয় এবং দুর্যোগের অব্যবহিত পরে দুর্যোগকৃত মানুষের মাঝে প্রাথমিক জরুরী খাদ্য সামগ্রী পৌঁছানো নিশ্চিতকরণের জন্য ৬৪টি জেলায় ৬৬ টি জেলা ত্রাণ গুদাম কাম দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা তথ্য কেন্দ্র নির্মাণ করা হয় ।
প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন,ভূমিকম্পসহ অন্যান্য দুর্যোগে দ্রুত উদ্ধার ও অনুসন্ধান কার্যক্রম পরিচালনার জন্য অ্যাকোয়াটিক সি সার্চবোট, মেরিন রেস্কিউ বোট, মেগাফোন সাইরেনসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম, যন্ত্রপাতি ও যানবাহন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর এবং সশস্ত্র বাহিনী বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে প্রদান করা হয়েছে । এ কার্যক্রম সহজ করার জন্য আরো অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামাদি সংগ্রহের কাজ চলমান রয়েছে ।
দুর্যোগকালীন ঘূর্ণিঝড় প্রবণ উপকূলীয় এলাকায় লবণাক্ত পানি পরিশোধনে ৩০টি মাউন্টেড স্যালাইন ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট সংগ্রহ করা হয়েছে । সমন্বিত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার কারণে এসব কর্মসূচির মাধ্যমে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর বিপদাপন্নতা অনেকাংশে সহজে কমেছে ।