নবীনগরে যুবদল নেতার বিরুদ্ধে মসজিদের জায়গা দখলের অভিযোগের সংবাদ প্রকাশের পর সত্যতা পেলেন ইউ পি ভূমি কর্মকর্তা


নবীনগরঃ
ব্রাহ্মণবাড়িয়া নবীনগরে জিনদপুর ইউনিয়নের যুবদল নেতা জাহাঙ্গীর আলম ওরফে আল মামুনের বিরুদ্ধে সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, মসজিদের ডোবা, গো-ঘাসের সরকারী খাস জায়গা দখলের অভিযোগের সংবাদ নবীনগর প্রাইম টিভি ডটকম এ প্রকাশের পর সরজমিনে তদন্ত শেষে সত্যতা পেলেন ইব্রাহীমপুর ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা।
সরজমিনে গিয়ে জানা যায়,যুবদল নেতা মামুন ঈদুল ফিতরের আগের দিন রাতের আঁধারে অবৈধভাবে স্কুল,মসজিদ,গো-ঘাসের জায়গা জবরদখল করেন। সেসকল জায়গাগুলো দখলদার মুক্ত করতে নবীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর গ্রামবাসীর পক্ষে মসজিদ কমিটির সেক্রেটারি আবু নাসের শিমুল গত সোমবার (১৭/০৫) একটি অভিযোগ করেন। উক্ত অভিযোগের পর নবীনগর প্রাইম টিভি ডটকম সহ একাধিক সংবাদ মাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর বৃহস্পতিবার (২০/০৫) নবীনগর সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইকবাল হাসান এর নির্দেশক্রমে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন ইব্রাহিমপুর ভূমি অফিসে কর্তব্যরত ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা মো শাহ আলম। তিনি ঘটনাস্থলে পৌঁছে ঐ গ্রামের সকল গন্যমান্য লোক ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রউফের উপস্থিতিতে যুবদল নেতা মামুন কতৃক দখলকৃত সরকারী খাস ও মসজিদের জায়গা সনাক্ত করেন। এবংঅতিদ্রুত মাটি ভরাট করে দখল করা সকল জায়গা থেকে মাটি সরানোর নির্দেশনা প্রদান করেন। তারই সাথে হাসান উদ্দিন,আব্দুর রহমান, আবু নাসের শিমুলের বিরুদ্ধে করা মামুন গংদের অভিযোগের স্থানও পরিদর্শন করেন।
এবিষয়ে একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, আল মামুন খারাপ প্রকৃতির লোক তার ভয়ে কেউ মুখ খুলতে চায় না,সে মসজিদের জায়গা দখল করলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করায় বেপরোয়া হয়ে সমাজ সেবক হাসান উদ্দিনের বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট তথ্য দিয়ে অভিযোগ করে অপপ্রচার শুরু করেন।তারা আরো বলেন,মামুন যে টয়লেটের ট্যাংকি খালের মধ্যে রয়েছে বলে অভিযোগ করেছে তা ভিত্তিহীন, এই ট্যাংকি আমাদের নিজের জায়গায় রয়েছে।কেননা পূর্বে সরকারি খাল ১২ ফুট ছিল, বৃষ্টির পানিতে আমাদের বাড়ির জায়গা ভেঙ্গে ৩৫ ফুট হয়েছে। আমরা ভাঙ্গরোধে আমাদের জায়গায় গাছ লাগিয়েছি এই বিষয়েও সে অভিযোগ করেছে, এমন হলে মানুষ চলবে কি করে।আমরা এর বিচার চায় এবং আজ যে ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা তাকে অবৈধভাবে দখল করা জায়গা খালি করার কথা বলেছে তা যেন দ্রুত বাস্তবায়ন করা হয়। এবং ভাল মানুষের নামে মিথ্যা বানোয়াট তথ্য থেকে বিরত থাকে সেই অনুরোধ করি আমরা।
মিথ্যা বানোয়াট অভিযোগ ও অপপ্রচারের বিষয়ে মোঃ হাসান উদ্দিন বলেন, মসজিদ কমিটির লোকজন তাদের জায়গা অবৈধভাবে মামুন কতৃক দখল হওয়ায় ইউএনও বরাবর অভিযোগ করেন।এতে সে ক্ষিপ্ত হয়ে উদ্দেশ্য প্রণীতভাবে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট অভিযোগ করে বিভিন্ন গণমাধ্যম ভূয়া তথ্য প্রচার করে আমার মান সম্মান ক্ষুন্ন করেন।আমি এর নিন্দা জানাই ও প্রতিকার চায়।মামুন সে নিজেই একজন ভূমিদস্যু।
এবিষয়ে সরকারী খাস ও মসজিদের জায়গা অবৈধভাবে দখলকারী জাহাঙ্গীর আলম ওরফে আল মামুন বলেন, আমি আমার জমি খনন করে চারপাশে পাড় বাধঁতে গিয়ে খানিকটা স্কুলের, মসজিদের, সরকারি গোঘাসের জায়গা ভরাট করেছি। আজ ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা আমাকে আমার স্থানীয় চেয়ারম্যানের সামনে ডেকে মাটি সরানোর কথা বলেছেন,আমি অচিরেই মাটি সরিয়ে ফেলব।ফসলি জমি পুকুর বা বাড়ি করার জন্য কি শ্রেনি পরিবর্তন করার অনুমতি নিয়েছেন?এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন,না আমি কোন শ্রেনি পরিবর্তন করার অনুমতি নেয়নি। আমার জমি পরিত্যক্ত হওয়ায় বাড়ি করার সিদ্ধান্তে খনন করে পাড় বেঁধেছি।
অবৈধভাবে ফসলি জমি খনন ও সরকারী জায়গা দখল কারী আল মামুন সম্পর্কে জিনদপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান অফিসে ডেকে ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা কি ধরনের নির্দেশনা দিয়েছেন জিজ্ঞাসা করা হলে, জিনদপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রউফ বলেন, আজ আল মামুন কে আমার অফিসে ডেকে তার দখল করা সকল সরকারি খাস জায়গা থেকে অবিলম্বে মাটি সরানোর নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। সে মাটি সরিয়ে ফেলব বলে স্বীকার করেছে।
সরকারি খাস জায়গা দখল করে মাটি ভরাট করা আল মামুনের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে এই বিষয়ে ইব্রাহিমপুর ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা শাহ আলম বলেন, আমি নবীনগর সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইকবাল হাসান স্যারের নির্দেশক্রমে ঘটনাস্থল সরজমিনে তদন্তে গিয়ে সত্যতা পেয়েছি, তার ভিত্তিতে তাকে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে ডেকে মাটি সরানোর নির্দেশনা দিয়েছি।