নবীনগরে স্বাক্ষর জালিয়াতি করে লক্ষ লক্ষ টাকা রিপন,মাজেদ,পান্নার লুটপাট।


নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
ব্রাহ্মণবাড়িয়া নবীনগরে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের আওতাধীন পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের গ্রাহকদের স্বাক্ষর জালিয়াতির মাধ্যমে গায়েবি ঋণ উত্তোলন করে লক্ষ লক্ষ টাকা লুটপাট করেন সাবেক ব্যবস্থাপক মোঃ রিপন, মাঠ কর্মকর্তা মাজেদুল ইসলাম ও পান্না বেগম।
তথ্য সূত্রে জানা যায়,হতদরিদ্র ও অসহায় পল্লী অঞ্চলের মানুষদের স্বাবলম্বী করতে সরকারের পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের আওতায় ৫ বছর মেয়াদি পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকে মাসে ২শত করে ২ বছর টাকা জমা দেওয়া পর চাহিদা অনুযায়ী গ্রাহকদের ঋণ দেয়া হবে অথবা বাকী ৩ বছর রাষ্ট্রীয় সরকার মাসিক সঞ্চয়ের টাকা নিজস্ব ফান্ড থেকে জমা করে এককালীন সম্পূর্ণ সঞ্চয়ের টাকা গ্রাহকদের বুজিয়ে দিবেন।কিন্তু উপজেলার শিবপুর,নাটঘরের গ্রাহকদের নিকট থেকে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের ২ মাঠ কর্মকর্তা মাজেদুল ইসলাম ও পান্না বেগম মাসিক সঞ্চয়ের টাকা ২ বছর নেয়ার পর তাদের সঞ্চয়কৃত টাকার বই ঋণ দেয়ার কথা বলে তাদের নিকট জমা নেয়।এবং ৭০ জন গ্রাহকের নামে অর্ধকোটি টাকার উপরে গায়েবি ঋণ উত্তোলন করেন তারা। পরবর্তীতে উত্তোলনকৃত ঋণের কিস্তি পরিশোধ করার নোটিশ গ্রাহকদের বাড়িতে যাওয়ার পর তারা জানতে পারে তাদের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে মাঠ কর্মকর্তা মাজেদুল ও পান্না বেগম ঋণ উত্তোলন করেছে।গায়েবি ঋণের কিস্তি পরিশোধের নোটিশ পেয়ে দিশেহারা হয়ে গ্রাহকেরা ভীড় জমায় উপজেলার একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের সামনে। এমনকি লিখিত অভিযোগ করেন জেলা কর্মকর্তা বরাবর। এর প্রেক্ষিতে সাময়িক বরখাস্ত করেন উপজেলা অফিস তাদের দুই মাঠ কর্মকর্তা মাজেদুল ইসলাম ও পান্না বেগম কে।কিন্তু এর মূলহোতা সাবেক ব্যবস্থাপক মোঃ রিপন শুধু পাশের উপজেলা মুরাদনগরে বদলি নিয়ে কোন শাস্তি ছাড়াই বেঁচে যায় বলে জানা যায়।
এবিষয়ে উপজেলার দাপুনিয়া গ্রামের গ্রাহক প্রবাসী সবুজ জানান,আমি ২০১৯ সালে ওমানে জেলে ছিলাম কিন্তু মাজেদুল আমার অজান্তে আমার নামে ঐ সময় কি করে ৩০ হাজার টাকার ঋণ উত্তোলন করল,কোথায় আমার আইডি স্বাক্ষর পেল এটা সরকারের কাছে তদন্তের জন্য অনুরোধ জানাই,অপর একজন গ্রাহক নিপু চন্দ্র দেবের ভাই জানান,আমার ভাই ৬ বছর পূর্বে একটি সঞ্চয় বই করে বিদেশ চলে যায়,কিন্তু গত কয়দিন পূর্বে ঋণের কিস্তি পরিশোধের নোটিশ যায় আমাদের বাড়িতে। নোটিশ পেয়ে আমরা হতবিহ্বল বিদেশ থেকে সে কি করে ঋণ উত্তোলন করল।তার স্বাক্ষর ও আইডি জালিয়াতি করার বিচার চাই আমরা।
স্বাক্ষর ও আইডি জালিয়াতি করে গায়েবি ঋণ উত্তোলন করার বিষয়ে শরিফা,ছুরাইয়া,হোসনে আরা সহ আরো গ্রাহক জানান,আমরা ২শত টাকা করে মাসিক সঞ্চয় করেছি সরকারি সুযোগ সুবিধা পেতে কিন্তু উল্টো আমাদের নামে গায়েবি ঋণ উত্তোলন করে কিস্তি পরিশোধের চাপ দেয়ায় আমরা দিশেহারা। সরকারের কাছে আমরা এর সঠিক বিচার চাই।
এবিষয়ে নবীনগর উপজেলা একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের ব্যবস্থাপক বাচ্চু মিয়া জানান, আমার সময়ে ঋণ উত্তোলনের ঘটনা নয় এগুলো পূর্বের ব্যবস্থাপক রিপন সাহেবের সময় হয়েছে,আমরা মাজেদুল ও পান্না নামের দুইজন মাঠ কর্মকর্তা কে সাময়িক বরখাস্ত করেছি,তারা গোপনে এসে ধীরে ধীরে ঋণ পরিশোধ করছে।এখন জেলা থেকে বিষয়টি তদন্ত করতে জেলা কর্মকর্তা রঞ্জন ভৌমিক এসেছে।
তদন্ত করতে আসা একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের জেলা কর্মকর্তা রঞ্জন ভৌমিক জানান,আমরা লিখিত অভিযোগ পেয়ে দুইজন মাঠ কর্মকর্তা কে সাময়িক বরখাস্ত করেছি,তদন্ত চলছে।তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।