পাকিস্তানের ধাওয়া খেয়ে পালাল ভারতের যুদ্ধ বিমান..
কাশ্মীর সীমান্তে রাতের আকাশে চলছিল টান টান উত্তেজনা। হঠাৎ পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সক্রিয়তায় ধরা পড়ে ভারতের ৪টি রাফাল, মুহূর্তেই ফিরে যেতে বাধ্য হয়!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
কাশ্মীর সীমান্তে ফের উত্তপ্ত পরিস্থিতি। ২৯ এপ্রিল, মঙ্গলবার গভীর রাতে পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে আকাশপথে ঘটে গেল এক নাটকীয় ঘটনা—যা দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের বৈরিতির মধ্যে নতুন করে উদ্বেগ ছড়িয়েছে। পাকিস্তান বিমানবাহিনী (PAF) জানিয়েছে, কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণ রেখা (LoC) সংলগ্ন আকাশে ভারতের চারটি রাফাল যুদ্ধবিমান প্রবেশ করলে পাকিস্তানি বাহিনী সঙ্গে সঙ্গে উচ্চ সতর্কতা জারি করে। মুহূর্তের মধ্যে প্রতিক্রিয়ায় সক্রিয় হয় PAF-এর স্কোয়াড্রন—ফলস্বরূপ ভারতীয় বিমানগুলো এলাকাছাড়া হয়ে পিছু হটে।
বুধবার, ৩০ এপ্রিল পাকিস্তানের শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যম দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন এ ঘটনা নিশ্চিত করে।প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতীয় বিমানগুলো অবৈধভাবে অধিকৃত জম্মু ও কাশ্মীরের আকাশসীমা অতিক্রম করে টহল দিচ্ছিল। এই মুহূর্তে পাকিস্তানের বিমান রাডারে ধরা পড়ে যায় রাফালগুলো। রেসপন্স ইউনিট অত্যন্ত দ্রুত গতিতে প্রতিক্রিয়া জানায়, যার ফলে ভারতীয় বিমানগুলোকে তড়িঘড়ি করে ফিরে যেতে হয়।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা নতুন মাত্রা পেয়েছে। ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পেহেলগামে ঘটে ভয়াবহ এক সন্ত্রাসী হামলা—যেখানে প্রাণ হারান ২৬ জন নিরীহ মানুষ, যাদের বেশিরভাগই ছিলেন পর্যটক। বিশ্লেষকরা বলছেন, ২০০০ সালের পর এটিই কাশ্মীর অঞ্চলের সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী হামলাগুলোর একটি।এই হামলার পরিপ্রেক্ষিতে ভারত একতরফাভাবে ঐতিহাসিক ‘ইনডাস ওয়াটার ট্রিটি’ বাতিলের ঘোষণা দেয়, যা ১৯৬০ সালে বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় স্বাক্ষরিত একটি পানি বণ্টন চুক্তি। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তান হুমকি দেয় ১৯৭২ সালের সিমলা চুক্তি স্থগিত এবং ভারতীয় বিমানের জন্য আকাশসীমা বন্ধ করে দেওয়ার।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ এই হামলার নিরপেক্ষ আন্তর্জাতিক তদন্ত দাবি করেছেন। অন্যদিকে, পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী আত্তা তারার জানিয়েছেন, তাদের কাছে নিশ্চিত গোয়েন্দা তথ্য রয়েছে—ভারত এই সন্ত্রাসী হামলাকে ‘অজুহাত’ হিসেবে ব্যবহার করে আগামী ২৪ থেকে ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে সীমিত সামরিক অভিযান চালাতে পারে।তিনি ভারতের মনোভাবকে ‘নিজেই বিচারক, জুরি এবং কার্যনির্বাহী হিসেবে কাজ করার একটি বিপজ্জনক প্রবণতা’ বলে উল্লেখ করেন এবং সতর্ক করেন যে, এই ধরনের আচরণ আঞ্চলিক স্থিতিশীলতাকে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
ভারতীয় প্রতিরক্ষা সূত্র বলছে, পেহেলগামের হামলার পেছনে সীমান্ত পেরিয়ে আসা জঙ্গিদের হাত থাকতে পারে। তবে এখনও পর্যন্ত কোনো ধরনের নির্ভরযোগ্য প্রমাণ পেশ করা হয়নি। পাকিস্তান এই অভিযোগকে সরাসরি অস্বীকার করেছে এবং বলেছে, তারা এই ঘটনার সঙ্গে কোনোভাবেই জড়িত নয়।পাকিস্তানের এক সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়—“আমরাও বহুবার সন্ত্রাসবাদের শিকার হয়েছি, তাই এর ব্যথা আমরা অনুভব করি। আমাদের অবস্থান বরাবরই শান্তিপূর্ণ সমাধান ও কূটনৈতিক সংযমে বিশ্বাসী।”কাশ্মীরের আকাশে মঙ্গলবার রাতে ঘটে যাওয়া এই ঘটনাটি নিঃসন্দেহে দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক অবিশ্বাস ও সামরিক উত্তেজনার প্রতিচ্ছবি। যেখানে একদিকে রয়েছে পাল্টাপাল্টি দোষারোপ, অন্যদিকে রয়েছে স্নায়ুযুদ্ধের হুমকি। রাফাল যুদ্ধবিমানের পিছু হটা এবং পাকিস্তানের উচ্চ সতর্কতা স্পষ্ট করে দেয়—উভয় দেশের মধ্যে কেবল কথার যুদ্ধ নয়, আকাশপথেও সংঘাত যে কোন মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়তে পারে।