Uncategorized

রাফি হত্যাকান্ডে প্রভাবিত হয়ে নিরাপধরাধ দুই যুবককে ফাঁসিয়ে দিয়েছে পুলিশ!

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে পুলিশের রোষনলের স্বীকার হয়েছে নিরপরাধ দুই যুবক। ওই পুলিশ কর্মকর্তার সাক্ষীদের অজ্ঞাতসারে মিথ্যা জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করে মামলা চুরান্ত রির্পোট কোর্টে দাখিল করেছে। মামলাটি উপজেলার আহম্মদপুর গ্রামের চাঞ্চল্যকর রাফি হত্যা মামলা। মামলা নং-৩১ তাং৩০/০৩/২২ ইং ধারা ৩০২/৩৪ পেনাল কোড। উক্ত মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস আই মোঃ জাহাঙ্গীর আলম বিপি নং-৭৮৯৭০৩৫৬১০। নিরাপরাধ ওই দুই যুবক হচ্ছে উপজেলার লাউর ফতেহ্পুর ইউনিয়নের আহাম্মদপুর গ্রামের স্বপন মিয়ার ছেলে আল-রাফি-(১৭) ও মৃত হুরন মিয়ার ছেলে শিমুল মিয়া(১৮)। এলাকাবাসীর ও মামলা অন্যতম পত্যক্ষদর্শী সাক্ষিদের দাবি আল-রাফি ও শিমুল নিরপরাধ। তারা ঘটনাস্থলে ছিলেন না। কিন্ত ওই পুলিশ কর্মকর্তা এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তিদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে গত ২৭ আগষ্ঠ ওই দুই যুবককে চার্জশীটভুক্ত আসামী করে কোর্টে চুড়ান্ত রিপোর্ট দাখিল করেন। অথচ রাফি হত্যার মুল আসামী আহাম্মদপুর গ্রামের বিল্লাল মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ প্রদীপ-হাসান-(২০)আদালতে তার স্বীকারউক্তি জবানবন্ধীতে বলেন, ঘটনাস্থলে সে একাই রাফি’র বুকে ছুুরি ঢুকিযে দিয়ে পালিয়ে যায়। সেই সময় রাফি হত্যা ঘটনার পর স্থানীয় সংবাদকর্মীরা বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেই সকল প্রতিবেদনে প্রকৃত মূল ঘটনাটি উঠে আসে ঘটনাস্থলে প্রদিপ একাই আত্মরক্ষায় রাফি’র বুকে ছুরি চালায়। ওই পুলিশ কর্মকর্তা কোর্টে তার দাখিলকৃত চুড়ান্ত রির্পোটে স্বাক্ষীদের জবানবন্দীতে উল্লেখ করেন,“ শিমুল ও আল রাফি আরিফুল ইসলাম রাফি ভূইয়াকে ধরে রাখে আর প্রদীপ তার বুকে ছুরিঘাঘাত করে”। অথচ স্বাক্ষীরা এ ধরনের বক্তব্য পুলিশের কাছে দেয়নি বলে তারা সাংবাদিকদের কাছে জানায়। তদন্ত কর্মকর্তা’র এই অনৈতিক কর্মকান্ডের ঘটনায় এলাকায় সাধারণ মানুষসহ স্বাক্ষীদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
স্বাক্ষীদের অজ্ঞাতসারে মিথ্যা জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করার ঘটনার অনুসন্ধানকালে মামলার অন্যতম স্বাক্ষী নুরে আলম প্রকাশ বিদ্যুৎ এ প্রতিবেদকে জানান,প্রদীপ মাঠ থেকে আমাদেরকে ছুরি’র ভয় দেখিয়ে দৌড়ে চলে যায়,পরে ব্রীজের ওপাড়ে চিৎকার শুনে তারা ঘটনাস্থলে যায়। ঘটনাস্থলে শিমুল ও আল রাফি ছিল না তারা তাদের সাথে মাঠের স্মৃতিসৌধের সামনে ছিল সেখান থেকে হঠ্রগোল শুনে সকলে একসাথে দৌড়ে ঘটনাস্থলে যায়। সেখান থেকে আরিফুল ইসলাম রাফিকে আহত অবস্থায় নবীনগর হাসপাতালে নিয়ে যায় তারা।
মামলার আরেক অন্যতম স্বাক্ষী যে দোকানের সামনে ঘটনা ঘটেছে সেই দোকানের মালিক মোজাম্মেল জানায়, সেই সময় কাষ্টমারের সাথে তিনি মালামাল বেচা নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন কিছুই দেখেনি। পরে লোকজনের হট্রগোলে রক্তাক্ত অবস্থায় রাফিকে দোকানের সামনে পরে থাকতে দেখে। তিনি যে মামলার স্বাক্ষী সে বিষয়টিও তিনি জানেন না। পুলিশের কাছে এ ধরনের কোন বক্তব্য তিনি দেননি।
মামলার আরেক অন্যতম প্রত্যক্ষদশী স্বাক্ষী মোছাঃ তাছলিমা বেগম জানান,তিনি তখন দোকানে মাল কিনতে আসেন এবং দোকানদারের সাথে মালামাল কেনা নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন পিছনে কি ঘটছে তা দেখেননি কে কাকে মারছে কে ধরে রেখেছে তা তিনি কিছুই দেখেনি শুধু রক্তাক্ত অবস্থায় আরিফুল ইসলাম রাফি’কে মাটিতে পরে থাকার দৃশ্যটি দেখেছেন। আল-রাফি ও শিমুলকে জড়িয়ে পুলিশ যে জবানন্দি আদালতে প্রেরন করেছে সেই জবানবন্দি তারা দেননি।
মামলার আরেক অন্যতম স্বাক্ষী নিহতের চাচাতো ভাই ও বন্ধু রিফাত চৌধুরী জানায়, প্রদিপ আরিফুল ইসলাম রাফিকে একাই ছুরি মেরে পালিয়ে যায়।সে সময় আল-রাফি ও শিমুল ছিল না।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও একই এলাকার বাসিন্দা সাব্বির ভূইয়া বলেন, রাফি ভূইয়াকে ছুরিকাঘাত করার সময় আল রাফি ও শিমুল ঘটনাস্থলে ছিলেন না। তাদেরকে মামলায় ফাঁসিয়ে দেয়া হয়েছে।
আল-রাফির পিতা স্বপন মিয়ার বলেন, ঘটনার সময় আমার ছেলে সেখানে ছিলনা। মেয়েকে ইভটিজিং করার প্রতিবাদে আমার ছেলে আল রাফি বন্ধুদের কাছে বিচার চাওয়ায় পরিকল্পিতভাবে তাকে আসামী করা হয়েছে। নিজের ছেলেকে নির্দোষ দাবী করে তিনি বলেন, আমি রাফি ভূইয়া হত্যাকান্ডের বিচার চাই এবং আমার নির্দোশ ছেলের নামে যে মিথ্যা চার্জশীট দেওয়া সেটা প্রত্যাহার করে পুলিশের এহেন অনৈতিক কাজের বিচার চাই।

এ ব্যাপারে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস আই জাহাঙ্গীর আলম তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,স্বাক্ষীরা আমার কাছে যে ভাবে জবানবন্দি দিয়েছে আমি ঠিক সেই ভাবেই জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করে আদালতে প্রেরণ করেছি।

Back to top button